দুই বোন
বসন্ত পুর গ্রামে একটি ছোট্ট পরিবাররের মেয়ের নাম রানী। কিন্তু রাধা শহরে গিয়ে বাড়িতে বাড়িতে কাজ করতো। আর রানীকে দিয়ে কোন কাজ করাতো না। কেননা রানী পড়াশোনাতে ভালো ছিল। রাধা কাজ করে যে টাকা পেত সেটা দিয়ে তাদের সংসার চলে যত। কিন্তু রাধা মনে মনে চিন্তা করতে লাগল।যদি আমি সব পয়সা খরচ না করে কিছু পয়সা রেখে দেই প্রত্যেক দিন তাহলে রানীকে শহরে ভর্তি করানো হবে। সে তার পরের দিন কাজ করে সংসার খরচ করে যে পয়সাটা থাকলো সেটা সে একটি মাটির পাত্রতে রেখে দিল। সে প্রত্যেক দিন মাটির পাত্রতে রাখতে লাগলো। প্রত্যেকদিন রাখতে রাখতে অনেক পয়সা জমা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পরে রাখিবন্ধন এল স্কুলের স্যার ক্লাসে সবাইকে বলল আজ কে রাখি বন্ধন। সবাই বাড়িতে গিয়ে নিজের ভাই বোনকে রাখি পড়াবে তখন রানী মনে মনে বলল আমি আমার দিদিকে পড়াবো। রানী বাড়ি এল তার দিদিকে বলল দিদি আমাকে কিছু পয়সা দাও, দিদি বলল কেন কি করবি তখন রানী বলল দিদি আজকে রাখি বন্ধন। আমি তোমাকে রাখি পরাবো। তখন রাধা কিছু পয়সা রানী কে দিল। মাটির পাত্র থেকে। অনেকদিন কেটে গেল সেই মাটির পাত্র ভর্তি হয়ে গেছে। তখন রাধা সেই মাটির পাত্রটি নিয়ে এসে দেখল যে অনেক পয়সা হয়েছে রানীকে শহরে ভর্তি করা হবে। তখন রাধা রানীকে ডাকল এবং বলল রানী আমি তোকে শহরে ভর্তি করব চল। তারপর তারা শহরে এসে রানীকে ভর্তি করল। রানী স্কুলে থাকতে লাগল এবং রাধা বাড়ি চলে এলো, অনেক বছর হয়ে গেল রানী শহর থেকে একটা চিঠি পাঠিয়েছে রাধাকে, তখন পিয়ন রাধার বাড়ির কাছে এসে ডাকছিন বলল কে কি আছেন রাধা আছে? তার বোন শহর থেকে চিঠি পাঠিয়েছে। তখন রাধা ঘর থেকে বেরিয়ে এলো এবং বলল আমি রাধা তখন পিয়ন চিঠি দিয়ে চলে গেল। এবং রাধা চিঠিটা নিয়ে সে তার একটা প্রতিবেশী কাকুর বাড়ি চলে গেল। এবং বলল কাকু আমাকে রানী একটা চিঠি পাঠিয়েছে। কি লেখা আছে বলেন তো আমাকেতখন তার কাকু চিঠিটা নিয়ে পড়ে দেখলো এবং রাধাকে বলল খুশির খবর রানী ডাক্তার হয়েছে। তখন রাধা বলল সত্যি কাকু আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিছুদিন পর রাধা একদিন শহরে গেলো রানির কাছে গিয়ে বললো রানী কে বলল এখন তো তোর পড়াশোনা শেষ হয়ে গেছে চল তাহলে দুইজন মিলে বাড়ির ফিরে যায় এবং সেখানে গিয়ে দুইজনে থাকবো। কিন্তু রানী বলল আমি তোর কাছে ফিরে যাবো না। এই বলে রাধাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিল রাধা কান্না করতে করতে সেখান থেকে চলে গেল। কিছুদিন পরে রানীকে তার অফিস থেকে বের করে দিল। রানী রাধার কাছে না গিয়ে সে তার কাজ খুঁজতে লাগলো। কিন্তু কেউ তাকে কাজ দেয় না।সে রাস্তায় যেতে যেতে রাধা কে দেখতে পেল রানী রাধার দিকে ছুটে চলে গেল এবং রাধা কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো এবং রানী রাধাকে বলল আমাকে ক্ষমা করে দাও আমার ভুল হয়ে গেছে। রাধা বললো, ঠিক আছে, আমি তোকে ক্ষমা করে দিলাম তুই তো আমার ছোট বোন। চল আমরা বাড়ি ফিরে যাই। এবং তারা সুখের সংসার করতে লাগলো।