কোরআন ও হাদিসের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন

              বিশ্ব পরিবেশ দিবস একটি প্রতিষ্ঠানিক উদযাপন, যা প্রতি বছরের ৫ জুনে আয়োজিত হয়। এটি জমির সুরক্ষা, জৈববৈচিত্র্য, বাতাসের প্রদূষণ ও পরিস্কারতা, জলমালিন্য, গবেষণা এবং শিক্ষা সংস্কৃতি ইত্যাদির প্রচার ও বিকাশের প্রচেষ্টা প্রশংসা ও পর্যালোচনা করার জন্য প্রতিষ্ঠানিত হয়। এই দিনটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপলক্ষে উদযাপিত হয় এবং মানুষের সম্প্রদায় সংগঠন, সরকার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বিভিন্ন পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্প ও সামাজিক প্রচেষ্টা দেখার জন্য এই দিনটি ব্যবহার করে।

             কোরআন ও হাদিস মূলত ইসলামের ধর্মগ্রন্থ এবং সূত্রগুলি যেগুলি মুসলিমদের জীবনের নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়, তা পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা ও আদর্শ নির্ধারণ করে। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে পৃথিবীর সৃষ্টি, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রাণী ও পশুপাখির সংরক্ষণের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামে প্রচলিত হাদিসগুলিও পরিবেশের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের প্রশংসা করে।

             ইসলামে পরিবেশের দুর্গটনা ও প্রদূষণ সংক্রান্ত মানবতার দায়িত্বের উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষত সংস্কৃতি, সামাজিক অর্থনীতি ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে ইসলাম একটি সম্পূর্ণ সংস্কৃতি প্রকাশ করে। এই ধর্মের অনুযায়ী মানব জীবনের সকল সম্পদ, বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক প্রণীতি, পানি, জমি, জীবনধারা ইত্যাদি মানবজীবনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব জিনিস হিসেবে বিবেচনা করা              হয়েছে।

             এই প্রকাশের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অনুগত অনুযায়ী পরিবেশ সংরক্ষণের মূল সিদ্ধান্তগুলি প্রচারিত হচ্ছে এবং ধর্ম পালনকারীদের জীবনে পরিবেশ সংরক্ষণের সম্পর্কে সচেতন করে দেওয়া হচ্ছে। কোরআন ও হাদিসের পরামর্শে মানুষ বাতাসের প্রদূষণ, জল বা জমির দুর্গটনা, জীবনধারা বৈচিত্র্য ও প্রাণী-পশুপাখির সংরক্ষণ সংক্রান্ত দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। যেমন কোরআনে বলা হয়,

"স্বমুখে নিজ প্রাণীদের আহরণ করা নয়।" (সুরা আর-রম, আয়াত ১০০)

এছাড়া হাদিসেও উল্লেখ করা হয়,

"যখন যমীনে কোন মূল বিপন্ন হয়ে যায়, তখন তা বাওয়ার উপর সুত্র বসিয়ে দিয়ে দেয়া উচিত।" (সহিহ মুসলিম)

হাদিস মুসলিমদের প্রিয় প্রমাণ উত্স। এটি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর বাণী বা প্রমাণ যা মুসলিম সম্প্রদায়ের জীবনে নির্দেশ করে। হাদিসে পরিবেশ সংরক্ষণের প্রশংসা ও পরামর্শ অনেকগুলি রয়েছে। হাদিস থেকে আমরা জানি যে প্রকৃতির সম্পদ সংরক্ষণ করা উচিৎ, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা উচিৎ এবং প্রাণী-পশুপাখির সংরক্ষণ আমাদের দায়িত্ব।

             কুরআনে বলা হয়, "সুতরাং তোমরা আর কী সামগ্রী পুর্বের বাদে উচ্ছিষ্ট করার জন্য নির্ধারিত মানুষ এর পেছনে গিয়ে হাজির হবে না। সবাই নিজের পান্থায় চলবে, নিজেই নিজেকে উপস্থাপন করবে।" (সুরা আল-আরাফ, আয়াত ১৪৭)

             এছাড়া হাদিসেও উল্লেখ করা হয়, "প্রকৃতি সংরক্ষণে এমন কাজ কর যা তুই নির্ধারণ করেছি প্রকৃতির ভগবান্ বার্ষিক সামগ্রী ব্যবহারের সমস্ত অপরাধ থেকেও উচিত।" (সুনান আবু দাউদ)

             উপরের উক্তিগুলি প্রমাণ করে যে, হাদিস মাধ্যমে আমাদেরকে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিস্কারতা বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মাধ্যমে আমরা হাদিসের পরামর্শ মেনে চলে এবং আমাদের পরিবেশের সংরক্ষণ করতে প্রতিষ্ঠান করে যাচ্ছি।

             পরিবেশ সংরক্ষণের উন্নয়নে হাদিস ও বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদযাপন একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে আমরা পরিবেশের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্য চিন্তাভাবনা করে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা প্রতিষ্ঠা করে যাই। হাদিস থেকে আমরা জানি যে আমাদেরকে পরিবেশ সংরক্ষণে প্রাথমিকতা দিতে হবে এবং আমরা সবাই মেনে চলবে হাদিসের সূচনা এবং পরামর্শগুলি।

             বিশ্ব পরিবেশ দিবস পরিচালনার মাধ্যমে আমরা সকলেরকে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সচেতন করতে পারি। আমরা পরিবেশের সংরক্ষণের প্রশংসা করতে পারি এবং আমরা সকলেরকে পরিবেশ সংরক্ষণের উপর ভিত্তি করে স্বচ্ছতা ও সাবলীলতার জন্য পরিবেশের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য করতে পারি।

 

             এইভাবে কোরআন ও হাদিস প্রমাণ করে যে, ইসলামের ধর্মীয় ও নৈতিক সিদ্ধান্তগুলি পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সুস্থ পরিবেশের প্রশংসা করে। পরিবেশের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইসলাম প্রচুর পরামর্শ দেয় এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডগুলি পরিবেশ সংরক্ষণের সমর্থন করে।

             আমাদের সকলের জন্য একটি পরিবেশের উন্নয়নে যোগাযোগ ও প্রভাবশালী উদাহরণ হিসেবে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদযাপন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে আমরা পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য চিন্তাভাবনা করে এবং অবশ্যই ইসলামের আদর্শ ও মর্যাদা অনুসরণ করে এগিয়ে যাই। আমাদের সম্প্রদায় এবং সমাজ পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আমাদের ভূমিকা প্রদান করতে হবে এবং পরিবেশের সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

             সবশেষে বলা যায় যে, কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন একটি গৌরবময় অনুষ্ঠান যা পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিস্কারতা বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে ইসলামের দর্শন, নীতিমালা ও মর্যাদার সাথে পরিচিত হতে হবে এবং আমরা সবাই পরিবেশের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে আমাদের ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত হতে হবে।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter