আবুল হাসানাত লাখনাওি
ইমাম আব্দুল হায় লাখনাওি নিজ যুগের সব থেকে বড় ইমাম বলে গণনা করা হয়। তিনার পুরো নাম ইমাম শেখ আবুল হাসানাত মুহাম্মাদ আব্দুল হায় বিন আব্দুল হালিম বিন আমিনুল্লাহ আলআনসারী সাহালাওি লাখনাওি আল-হিন্দি। তিনার বংশ আবি আয়্যুবুল আনসারীর তালিকা প্রযন্ত পৌছায় যিনি নবী সাল্লাহু আলাইলিহি ওয়া সাল্লামের সাহাবী ছিলেন। তিনার জন্ম ২৬ আরাবি মাস যিল কায়দা ১২৬৪ হিজরিতে বান্দা নামক জাইগাতে হয়। তিনি অনেক জ্ঞানে জ্ঞানী ছিলেন আর তিনি অনেক বই লিখেছেন যার সংখ্যা প্রায় ১২০-এর বেশি। তিনার পড়াশুনা বাল্যকাল থেকে শুরু হয়। সর্বপ্রথম তিনি কুরাআন হিফজ করেন তিনার বাবার কাছে এবং তিনি অন্য শিক্ষাও অর্জন করেন।
বাল্যকালঃ
তিনার বাল্যকাল থেকে জ্ঞান অর্জন করেন তিনার বাবার কাছে থেকে। প্রথমত তিনি যখন পাঁচ বছরের ছিলেন কুরআন হিফজ করতে শুরু করেন এবং দশ বছরে সম্পূর্ণ করেন। এর সাথে সাথে তিনি অন্যান বিষয় যেমন ফার্সি, তাজবীদ, আনুবাদ, নাহও, সরফ, মান্তিক, ফিকহা, হাদিস, তাফসীর শিখেন।
এবং তিনি সব থেকে বেশি জ্ঞানের মধ্য পছন্দ করতেন ইলমে হাদিস, এবং ইলমে ফিকহাকে। যখন তিনি বাল্যকাল থেকে বেশ কিছু জ্ঞান অর্জন শেষ করে বড় হলেন তিনি জ্ঞান অর্জন করার জন্য অনেক দূর রাজ্যে যাত্রা করেন এবং তাঁর সাথে সাথে অনেক বড় বড় আলেম গণদের সজ্ঞে সাক্ষাৎ করে তিনাদের বরকাত অর্জন করেছন। তিনার কুন্নিয়াত আবুল হাসানাত ছিল। তিনি নিজে বলেন যে আমার পিতা আমাকে আবুল হাসানাত কুন্নিয়াত দিয়েছিল যখন আমি বাল্যকাল থেকে যৌবনকালে পৌছায়।
তিনার যাত্রাঃ
বাবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনেক দূর বসিত স্থানে গিয়ে জ্ঞান অর্জন করেছেন বড় বড় আলেমগণদের নিকটবর্তী হয়ে। তিনার যাত্রা শুধু ভারতবর্ষে ছিলনা বরং তিনি ভারতবর্ষের বাইরে, এবং হিজাজ শহরে মাক্কা ও মাদিনাও যান। তিনার পিতার কাছে বাল্যকালের জ্ঞান অর্জন করেন এবং তিনার ইন্তেকালের পরে ইলমে আঁকলি অর্জন করেন শেখ মুখাম্মাদ নিয়মাতুল্লাহ (তিনার খালু) কাছে। তার পরে তিনি শেখ মুহাম্মাদ খাদিম হুসাইনের কাছে ইলমে হিসাব অর্জন করেন। এই ভাবে তিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য আরও অনেক জায়গা যাত্রা করে থাকেন।
তিনার শিক্ষক:
সর্বপ্রথম তিনার শেইখ তিনার পিতাযান ছিলেন যিনি তিনাকে প্রথম থেকে জ্ঞানের দিকে অগ্রসর করেছিলেন। তিনার পিতার ইন্তেকালের পরে তিনার খালু শেখ মুখাম্মাদ নিয়মাতুল্লাহ তিনাকে শিখিয়েছিলেন। তারপরে শেখ মুহাম্মাদ খাদিম হুসাইন, শেখ আহমেদ বিন জাইন দাহ্লান (যিনি মক্কা শারিফের শাফিয়ি মাধহাবের মুফতি),মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন হুমেদ (যিনি মক্কা শারিফের হাম্বেলি মাজহাবের মুফতি),মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদুল গারবি শাফিয়ি ,আব্দুল গানিয় বিন আবু সায়ীদ উমরি হানফি দাহ্লাওি (মদিনা শারিফের) প্রমুখ শেখদের তিনি সান্নিধ্য অর্জন করেন।
গ্রন্থসূমুহ:
তিনার জীবনের মধ্যে একটি আশ্চর্যজনক কথা যে তিনি শুধুমাত্র ৩৯ বা ৪০ বছর জিবিত ছিলেন। এর মধ্যে তিনি ১২০-এর বেশি বই লিখেছেন। এগুলি ২ ও ৩ বিষয়ের ওপর নয় বরং ১৫ কিংবা ২০ টি বিষয়ের ওপরে রচিত। তিনার কিছু বিখ্যাত বই হল যেমন – ইমতিহানুল তলাবা ফি সিগিল মুস্কিলা, ইযালাতুল যামদ আন ইরাবুল হামদ, আল-কালামুল মাতিন ফি তাহরীবুল বারাহিন, হাশিয়া আলা তাহযিবুল মানতিক, ফাওায়দুল বাহিয়া ফি তারাযিমুল হানফিয়া, আন-নাফিউল কাবীর, উমদাতুল রিয়ায়া ফি হিল্লি শারহুল ওকায়া, তালীকুল মুমাজ্জাদ আলা মুয়াত্তাইমাম মুহাম্মাদ, হাশিয়া আলা হিদায়া, কালামুল মাব্রুর ফি রাদ্দি কাউলিল মান্সুর, ইত্যাদি। তাছাড়া তিনি আরও বই লিখেছেন তার মধ্যে অনেক বই যেগুলি প্রকাশ করা হয়নি।
ইন্তেকাল:
তিনি অনেক কাজ করে - জ্ঞান অর্জন করা থেকে, বই লেখা, ইসলামের বানি প্রচার করা ইত্যাদি - আল্লাহ তালার প্রিয় হয়ে যান। রাবিউল আওওয়াল মাসে ১৩০৪ হিজরিতে ইন্তেকাল হন। তিনার মাকবারা লাখন শহরে। তিনি মোট ৩৯ বছর জীবিত ছিলেন। কিন্তু টিনার জ্ঞানের ফায়দা এখনও মুসলিম উম্মাত অর্জন করছে।