শাইর রাহাত ইন্দোরি
রাহাত ইন্দোরি নামটি শুনলেই তিনার হাসি মুখটি ভেসে উঠে যেন তিনি দর্শকের মাঝে উর্দু ভাষায় শায়েরী সংলাপ করছেন আর দর্শক তা থেকে উপভোগ করছেন। _রাহাত কুরেশি_ পরে রাহাত ইন্দোরি হিসাবে পরিচিত, ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি ইন্দোরে রাফাতুল্লাহ কুরেশি (কাপড়ের মিল শ্রমিক) এবং তাঁর স্ত্রী মকবুল উন নিসা বেগমের জন্ম। তিনি তাদের চতুর্থ সন্তান ছিলেন। রাহাত ইন্দোরি তার স্কুল নূতন স্কুল ইন্দোর থেকে করেছিলেন যেখানে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। 1 জানুয়ারী 1950 সালে ইন্দোর, মধ্য ভারত, ভারতের আধিপত্য (বর্তমান মধ্যপ্রদেশ, ভারত) জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তিনি তাঁর জীবনে এতকিছু সাফল্য পাওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজের জীবনকে এক সহজ-সরল পথ বেয়ে অতিবাহিত করেছেন। একজন ভারতীয় অন্যতম বলিউড গীতিকার এবং উর্দু ভাষার কবি হিসেবে তিনি তাঁর নাম লিখে গেছেন ।
১৯৭৩ সালে তিনি ইন্দোরের ইসলামিয়া করিমিয়া কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন এবং বরকতউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়(ভোপাল, মধ্য প্রদেশ)থেকে সোনার পদক নিয়ে সাহিত্যে এমএ পাস করে ডিগ্রী অর্জন করেন ও উর্দু ভাষার প্রাক্তন অধ্যাপক এবং চিত্রশিল্পীও ছিলেন। এর আগে তিনি ইন্দোরের দেবী অহল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু সাহিত্যের একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন।১৯৫৫ সালে মধ্য প্রদেশের ভোজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাহাতকে উর্দু ম্যায় মুশাইরা নামক থিসিসের জন্য উর্দু সাহিত্যে পিএইচডি পেয়েছিলেন।ইন্দোরি 40 - 45 বছর ধরে মুশায়রা এবং কবি সম্মেলনে অভিনয় করেছিলেন ,কবিতা আবৃত্তি করতে তিনি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক ভ্রমণ করেছিলেন।তিনি ভারতের প্রায় সকল জেলায় কাব্যিক সিম্পোজিয়ামগুলিতে অংশ নিয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল প্রভৃতি একাধিকবার ভ্রমণ করেছেন।তাঁর প্রতিটি শায়েরীর মধ্যে লুকিয়ে থাকত কিছু এক অভ্যন্তরীণ বা গোপনীয় অর্থ যা থেকে তিনি কাউকে যেন নির্দিষ্ট করে ঢিল মারছে। তিনি পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন: ধুপ (সূর্যের আলো, 1979), রূট (মরসুম, 1983), মেরে বাদ (আমার পরে, 1990), পঞ্চভান দরভেশ (পঞ্চম দার্वेश, 1992) এবং কুন ফা ইয়াকুন (হও এবং হয়গেল ) , 2002)। তাঁর গীতির মধ্যে ছিল এক দেশপ্রেমের পরিচয় বা দেশাত্মবোধ যা সারা বিশ্ব তার পরলোক গমনের পর তুলে ধরেছে।তিনি উর্দু কবিতা, গজল ধারার এক সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং বেশ কয়েকটি বলিউড গানের জন্য গানের কথাও লিখেছিলেন।
এ যেমন যদি দেখা যায় 'মুন্না ভাই এম.বি.বি.এস', 'মাডার' এবং অন্যান্য সিনেমার জন্য বেশ কয়েকটি বলিউডের গানের কথা লিখেছেন। তাঁর একটি শায়েরী "কে ম্যায় যাব মার জায়ু তো মেরা আলাগ প্যাহচান লিখ দেনা,খুন সে পেশানী পে হিন্দুস্তান লিখ দেনা" তাঁর মৃত্যুর পর বিশেষ ভাবে ভাইরাল হয়। হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডঃ বিনোদ ভান্ডারী বলেছেন যে ইন্দোরি দুটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তিনি নিউমোনিয়াতেও ভুগছিলেন। ভান্ডারী আরও বলেছিলেন যে রবিবার করোনভাইরাস সম্পর্কে সন্দেহের ভিত্তিতে ইন্দোরির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, তার পর সোমবার ভাইরাসের জন্য তিনি ইতিবাচক পরীক্ষা করেছিলেন।