ইমাম ইবনে মাজাহ ও তিনার সুনান
ইসলামের মূল ভিত্তির মধ্যে আল্লাহ তালার কালাম সর্ব প্রথম ( আল কুরআন এবং তার পর নবী (সাঃ) এর হাদিস । এবং এই হাদিসের ছয়টি বই আছে সেগুলি মুসলমানদের উপর বিখ্যাতগত ও বিশ্বাসগত। তার মধ্যে একটি হাদিসের বই সেটির নাম সুনান ইবনে মাজাহ নামে পরিচিত।
তিনার আসল নাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াজিদ আল কাজওনী। তিনার জন্ম ২০৯ হিজরিতে। তিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য অনেক জায়গা যাত্রা করেছেন, যেমন “হযরত ইবনে মালকানি” তিনি বলেছেন যে ইমাম ইবনে মাজাহ তিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য ইরাক,বসরা, কুফা, বাগদাদ, মক্কা, শাম, মিশর, এরং রাই এই সব জায়গাই তিনি হাদিসের জন্য যাত্রা করেছিলেন।
ইবনে হাজারেল আসকালানি তিনি তিনার “তাহজিব” কিতাবে বলেন যে ইমাম ইবনে মাজাহ জ্ঞান অর্জনের জন্য খুরাসান,ইরাক, হিজাজ মিশর ও শাম এই সব জায়গাই গিয়েছিলেন। আর এই সব জায়গাই তিনি যাত্রা করে ইলমে তাফসীরের জ্ঞান অর্জন করেন।
ইবনে মাজাহ নাম করণে মতভেদঃ
ইবনে মাজাহ এই নাম করণে অনেক আলেমের মধ্যে মতভেদ রয়েছে যেমন বলছে “ইমাম ইবনে মাজাহ “ এই উপাধি তিনার দাদার কাছ থেকে পেয়েছে বা কেউ বলেছে যে তিনার পিতার কাছ থেকে বা তিনার মায়ের কাছ থেকে পেয়ছে।
আল্লামা সাইদ মুরতাজা আজ জাবীদি তিনি তিনার তাজুল আরুজ (تاج العروض ) নামক বইে বলেন যে ইবনে মাজাহ এই উপাধি তিনার মায়ের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন।
শাহ আব্দুল আজিজ তিনি আজালাতু নাফিয়া নামক বইে বলেছেন যে ইবনে মাজাহ এই উপাধি তিনার পিতার কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন। ও অন্যান্য আলেমগণ বলেন যে ইবনে মাজাহ এই উপাধিটি তিনার দাদার কাছ থেকে পেয়েছেন।
তিনার ছাত্রগনঃ
১-আলি বিন সাইদ বিন আব্দুল্লাহ আল গাদালিল আসকারী ।
২- ইব্রাহিম বিন দিনার আর জিরিশিল হামদানি ।
৩- আহমাদ বিন ইব্রাহিম আল কাজভিনী।
৪- আবু তয়ীব আহমাদ বিন রুহ আশ শইরানী।
৫- জাফার বিন ইদরীস।
৬- সুলাইমান বিন ইয়াজিদ আল কাজওীনী।
ইবনে মাজাহ এর মানহাজ-
তিনি সর্বপ্রথম তিনার এই হাদিসে নবী (সাঃ) এর সুন্নত দ্বারা শুরু করেছেন কেননা যে এই হাদিসের বইটি পড়বে তার জন্য দরকার যে, সে সুন্নাতের ব্যাপারে আগে ধারণা করে আর এই রাস্তাই জীবনেকে অতিবাহিত করে। ইমাম সুয়ুতি তিনি বলেন যে ইবনে মাজাহ এই বইটিকে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে কারণ তিনি সর্বপ্রথম নবি (সাঃ) এর সুন্নাতকে আগে প্রকাশ করেছেন আর এটাকে সাহেবে ইবনে মাজাহ সাবধান করেছেন যে ইসালাম দিনে যতগুলি সুন্নত ওজিবাত আছে সেইগুলির উপরে আমল করে জীবন অতিবাহিত করা এবং তার পরে আকিদার বাব ইমান ও কাদারের দ্বারা আর এইগুলি মুকাল্লিফের উপর অনেক দরকার । এবং তার পরে সাহাবাদের ফযিলত এর ব্যাপারে বর্ণনা করেছেন ।
সাহেব ইবনে মাজাহ তিনার বইে কিতাবুত তহারাত দিয়ে শুরু করে কিতাবুত জুহুদ পর্যন্ত ব্যাখ্যা করেছেন এবং তিনার বইয়ে তিনি সব শেষ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাফিজ ইবনে কাসির তিনি বলেন যে – সাহেব ইবনে মাজাহ এই কারণে অনেক বিখ্যাত হয়েছেন যে তিনার ইলম ও তার উপর আমল করাতে এবং তিনি সুন্নতের উপর সমুদ্রের মত ছিল, সর্বদা আমল করতেন তার জন্য তিনি এই কিতাবে সুন্নত দিয়ে শুরু করেছেন।
আর এই বইয়ে (৩২) টি কিতাব এবং এক হাজার পাঁচশো (১৫০০) টি বাব এবং চার হাজার তিনশো একচল্লিশ (৪৩৪১) হাদিস জমা করা হয়েছে, এবং বলা হয়েছে যে এই বইয়ে চার হাজার তিনশো একচল্লিশ (৪৩৪১) টি হাদিস জমা করা হয়েছে তার মধ্যে সহিহ, হাসান জয়ীফ মওজু এবং মুনকির হাদিস জমা করা হয়েছে।
তিনার কিতাবঃ
১- সুনাহ ইবনে মাজাহ ।
২- আফসিরু হাফিল ।
৩- তারিখু কামিল ।
ইবনে মাজাহ এর শারাহ
১ শারাহ সুনান ইবনে মাজাহ ( আবিল হাসান আলি বিন আব্দুল্লাহ ইবনে নায়মাতুল আনসার আল উন্দুলুসি মুহাদ্দিসুল ফাকিহিল মালিকী ) ।
২ শারাহ সুনান ইবনে মাজাহ ( আল্লামা আব্দুলাহ লাতিফ আল বাগদাদি ) ।
৩ মাল তামাসা ইলাইহিল হাযাত মিন শারাহ ইবনে মাজাহ ( উমার বিন আলি বিন আহমেদ ইবনুল মুল্কিন ) ।
৪ মিসবাহুল জুযাযাহ আলা সুনান ইবনে মাজাহ ( জালালিদ্দিন আব্দুর রহমান বিন আবি বাকার মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আস সুয়ুতি ) ।
৫ আল ইলামু বিসসুনান আলাইহিস সালাম শারাহ ইবনে মাজাহ ( আল ইমাম হাফিজ আলাউদ্দিন মুগ্লাতাই ) ।
ইন্তেকাল
ইমাম ইবনে মাজাহ তিনার ইন্তেকাল ২৭৩ হিজরিতে করেছেন ।