হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) এবং তিনার করা কিছু উল্লেখ্য যোগ্য যুদ্ধ
হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) ৫৭৩ হিজরি সনে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ৬৩ বছর জীবন জাপন করে মৃত্যুবরন করেন। তার মধ্যে তিনি অনেক যুদ্ধে জয় লাভ করেছিলেন। তিনার ব্যাবসা-বাণিজ্যের জন্য অনেক ধনীদের মধ্যে খ্যাত ছিলেন। তিনি নিজের জীবন সম্পূর্ণ ইসলামের জন্য উৎসর্গ করে দেন। তিনাকে কাফেরদের দ্বারা অনেক বার আঘাত পেতে হয়। তার মধ্যে, একদিন আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) কুরাইশদেরকে ইসলামের ঘোষণা দিচ্ছিলেন। ঐ মুহূর্তে শত্রুদলেরা এসে তিনার উপরে আক্রমণ করে এবং তিনাকে বাঁচানোর জন্য হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) অনেক আঘাত পান। ফলে তিনি মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পরে যান। এই আঘাতটা কাফেরদের দ্বারা দেওয়া সর্বপ্রথম আঘাত ছিল। তার পরেও তিনি আরও অনেক আঘাত পেয়েছেন। এর পরেও তিনি নবি (সঃ)-এর সঙ্গে অনেক যুদ্ধে অংশ নেন। তার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য কিছু নিম্নস্বরূপ।
তাবুকের যুদ্ধ
চারিদেকে রাজ্যবর্গে অধিকাংশ মানুষ ইসলাম কবুল করে নিয়েছিল। ঐ সময় মোসলমানদের শক্তি অনেক বৃদ্ধি পাই। কিন্তু খ্রিষ্টানের শাসককর্তা মোসলমানদের এত উন্নতি সহ্য করতে পারল না। সে মক্কাতে আক্রমণ করার জন্য ষড়যন্ত্র করল। এই কথা রসূল (সঃ)-এর কানে গুঁজিত হয়। রোমের সরদার অনেক শক্তিশালী ছিল। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র করা সহজ কথা নয়। এই যুদ্ধের জন্য রসূল (সঃ) প্রস্তুত হয়ে গেলেন। এই যুদ্ধ তাবুকের যুদ্ধ নামে খ্যাত।
এই যুদ্ধে রসূল (সঃ) মুসলমানদের অনেক সাহায্য পেয়ে ছিলেন। হযরত আবু বাক্কার (রঃ) দানশালী রুপে অনেক সুনাম অর্জন করেন।
সেই যুদ্ধে আবু বাক্কার (রঃ) তিনার বাড়ির সব কিছু নিয়ে এসেছিলেন তিনি। তিনি বাড়িতে কিছুই রেখে আসেননি। রসূল (সঃ) তিনার দানের অনেক প্রশংসা করেন। সেখানে হযরত ওমর (রঃ) উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন দানের ক্ষেত্রে আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) মত দান করা সম্ভব নয়। রসূল (সঃ)-এর সঙ্গে তিনি অর্থাৎ আবু বাক্কার (রঃ) সর্ব ক্ষণ ছাতার মত থাকতেন। এত উদার প্রান ও ভদ্র সহাবী রসূল (সঃ)-এর কাছে আর দ্বিতীয় ছিলনা। রসূল (সঃ) রাতের অন্ধকারে সর্ব লোকের আগোচরে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন সেখানে শুধু মাত্র আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) ছিলেন।
বদর যুদ্ধ
হিজরির দ্বিতীয় সনে রমযান মাসে প্রথম মোসলমান ও কাফেরদের মধ্যে বদর যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এই যুদ্ধ রমযান মাসের ১৭ তারিখে ঘটে। সেখানে শুধু মাত্র ৩১৩ জন সহাবী অংশগ্রহণ করেন। সেখানে রসূল (সঃ)-এর জন্য হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) তিনি নিজে একটি তাঁবু তৈরি করেন। সেখানে তিনি রসূল (সঃ)-কে পাহারা দিতেন। কাফেরদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল কিন্তু মোসলমানদের সংখ্যা অনেক কম ছিল। তাই তারা এই সুযোগ নিয়ে তারা মোসলমানদের ওপর আক্রমণ করে। এই সব দেখে রসূল (সঃ) সিজদাই পরে যান এবং তাদের জন্য দুয়া করতে থাকেন। তা দেখে হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) বলেন: ইয়া রসূল আল্লাহ আপনার এই ভাবে মাথা নিচু দেখে আমার সহ্য হচ্ছেনা। তখন জিব্রিল (আঃ) এসে বলেন যে শত্রু দল যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যাবে এবং তারা পরাজিত হবে। এই শুনে রসূল (সঃ) যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলেন। যুদ্ধের শেষ প্রান্তে মোসলমানেরা কাফেরদের কে হারিয়ে দেন এবং এই বদর যুদ্ধের শেষে মোসলমানরা জয় লাভ করে। এই যুদ্ধে কাফেরদের মধ্যে ৭০ জন কাফের মৃত্যু বরণ করে তার মধ্যে ছিল আবু জেহেল আরও কিছু মক্কার সরদার। আরও ৭০ জঙ্কে বন্দি করা হয়ে ছিল। এই যুদ্ধের পর মোসলমানদের কাছে অনেক ধন চলে আসে। এই ভাবে বদর যুদ্ধের শেষ হয়।
তার পরেও হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক (রঃ) রসূল (সঃ) একসঙ্গে মিলে আরও কিছু যুদ্ধ করেন। তার মধ্যে হল উহুদ যুদ্ধ। এই উহুদ যুদ্ধে মোসলমানদের সংখ্যা ছিল ৭০০ শত কিন্তু তাদের মধ্যে সাহস ছিল সম্পূর্ণ। এই যুদ্ধে আরও অনেক সাহাবী ছিলেন কিন্তু হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিকের (রঃ)-এর নাম সর্ব উর্দ্ধে। এই যুদ্ধেও মোসলমানদের জয় হয়।