সর্বোত্তম 'উপহার' সম্পর্কে কিছু কাজের কথা
পহার: একটি চিরন্তন সামাজিক রীত
তোহফা' অর্থাৎ উপহার অর্থাৎ প্রেজেনটেশান লেনদেনের রেওয়াজ অজানা কাল হতে মানব সমাজে চালু রয়েছে অতিশয় স্নেহ-শ্রদ্ধার সঙ্গেই। ভালো প্রথা টিকে থাকে, মন্দ রেওয়াজ ধীরে ধীরে মুছে যায়। কিন্তু শর্ত এই যে, সমাজের অধিকাংশ মানুষরা যাতে স্বয়ং উত্তম স্বভাবধর্মী হয়। নতুবা মন্দের সংখ্যা গরিষ্ঠতায় মানব সমাজে মন্দপ্রথাও ভালো জ্ঞানে চালু হয়ে যায়। ঠিক যেমন - ইউরোপ-আমেরিকায় পারস্পরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাভক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রিয়পাত্রকে জড়িয়ে ধরা ও চুমু খাওয়া। সেখানে অন্তত বিগত একশ' বছর হতে চুম্বনের লেনদেন ভালা প্রথারূপে সগৌরবে চালু রয়েছে। পৃথিবীর অন্যত্র সেটাকে স্নেভক্তির নামে অতিশয় বাড়াবাড়ি এবং বেহায়াপনা বলা হয়।
লজ্জা-শরম মানব সমাজের ভিত্তি
আসল কথা, নীতি-নৈতিকতাবোধের জন্য মানবমনে লজ্জা-শরমের উপস্থিতি অত্যাবশ্যক। ইসলামের মতে, পৃথিবীর সমস্ত ভূখণ্ডে যুগে যুগে, কালে কালে নাবী-রাসূলদের আগমন ঘটেছে। তাঁরা মূল্যবান অনেক কিছুই ছেড়ে গিয়েছেন। কিন্তু, প্রত্যেক পয়গাম্বর যে জিনিসটি অনিবার্যভাবেই রেখে গিয়েছেন, সেটি হলো লজ্জা-শরম। সুখের কথা যে, সাম্প্রতিক পৃথিবীতে একমাত্র উম্মাতে মুহাম্মাদই লজ্জা-শরমকে সবচেয়ে বেশী মনে ও আমলে ধরে রাখতে পেরেছে। বাকিদের আসমানী কিতাব ও উপদেশমালা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় তারা জপজ্জীবনের বহুক্ষত্রই প্রবৃত্তিপূজায় মত্ত হয়ে উঠেছে। যাদের আসমানী আদেশ নিষেধ যতোবেশী বিকৃত হয়েছে, তাদের মধ্যে ততোবেশী নিলজ্জতা ও বেপরোয়া মনোভাব প্রসারিত হয়েছে। যাদের মধ্যে আসমানী গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়না, তাদর যুগ যুগান্তের লোকাচারে এবং ঋষিমুনি অথবা কল্পিত দেবদেবী প্রবর্তিত বিধানের মধ্যে ধীরে ধীরে ইউরোপ-আমেরিকার বিকৃত সংস্কৃতি জায়গা করে নিচ্ছে। পোষাকের ক্ষেত্রে অর্ধনগ্নতা, সূদ-শরাবের বহুল প্রচলন, মহিলা-পুরষে হ্যান্ডসেক, মনোরঞ্জনের নামে সেক্সুয়্যাল সুর-সংগীত সবই তো নিলজ্জতারই প্রথম স্তর।
এমনিভাবে একদিন যে আমাদের ভারতবর্ষেও তথা চীন জাপান আফ্রিকাতেও বেস্ট উপহারের নামে প্রিয়পাত্রদের মধ্যে সহর্ষে ও সোল্লাসে চুম্বন লেনদেনের গর্হিত কাজ কারবারটিও উত্তম প্রথার নামে অবাধে চালু হয়ে যেতে পারে তাতে সন্দেহের এমন কি আছে।
এই শ্রেণীর মারাত্মক ভাইরাসের সংক্রমণ হতে উম্মাতে মুহাম্মাদী আল্লাহর রহমতে একালেও যে অনেকাংশেই বেঁচে আছে, তার মৌল কারণ হলো, আল্লাহ প্রদত্ত লজ্জানুভূতি। ইসলামে লজ্জা-শরম সর্বোত্তম সম্পদ 'ঈমান'-এর এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ইসলাম অ-দেখা আল্লাহকেও সম্মুখে হাজির নাজির ভেবে লজ্জানুভব করতে আদেশ দিয়েছে। মানুষকেও মানুষের সামনে লজ্জা-শরম প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয করে দেওয়া হয়েছে। মূলতঃ একারণেই অন্যান্যদের তুলনা মুসলিম-সম্প্রদায়ের মধ্যে তোহফা-উপহার লেনদেনের ক্ষেত্রে হারাম-হালাল, জায়েজ নাজায়েজ ইত্যাদি সম্পর্কে চিন্তা-চেতনা অক্ষুন্ন রয়েছে।
মুসলিমদের সংস্কৃতিতে তোহফার বিশেষ স্থান
উম্মাতে মুহাম্মাদীর মধ্যে অগ্রজের পক্ষ হতে অনুজকে, সক্ষমের দ্বারা অক্ষমকে, ধনীর দ্বারা গরীবকে, উপকৃতের দ্বারা উপকারীকে তোহফা প্রদানের সু-রীতি শুরু কাল হতেই চালু রয়েছে। প্রসন্নচিত্তে দাতার 'বিসমিল্লাহ ' বলে দেওয়া এবং গ্রহীতার সহাস্যমুখে 'আল্লহামদুলিল্লাহ' বলে গ্রহণ করাকে পূণ্যময় কাজ বলা হয়েছে। ইসলামে তোহফা-উপহার একটা ব্যাপক অর্থবোধক ও বহুদ্দেশীয় শব্দ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিস্তৃত। ঈদের দিনগুলোতে ছোটরা বড়োদের পক্ষ হতে জায়েজ খাদ্য-পানীয় উপহার স্বরূপ পায়। ইসলামে জন্মদিন পালন নিষিদ্ধ, তাই সেদিন সন্তানরা মা-বাপের পক্ষ হতে অথবা দাদা-দাদি ও নানা-নানির পক্ষ হতে কিছুই পায়না। অত্যাধুনিক শ্রেণীর
অত্যল্পসংখ্যক মুসলিম ফ্যামিলী ছাড়া উম্মাতের আর সব রক্ষণশীল ঈমান আমলের মানুষেরা জন্মদিন পালনের বিষয়টিকে মনেও আনেনা। তবে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা-দীক্ষাগত সুযোগ্যতার কদর অবশ্যই করেন। ওদের কৃতিত্ব খুশী হয়ে স্বস্নেহে প্রীতি উপহার জরুর প্রদান করেন। দ্বীনদার ছেলেমেয়েরা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোতে সসম্মানে উত্তীর্ণ হলে মুসলিম সংগঠনগুলোর পক্ষ হতে উপহার প্রদান করা হয়। গরীব ঘরের ছেলেমেয়েরা দ্বীনি দুনিয়াবী বিদ্যার্জনে কৃতিত্বের অধিকারী হলে তাদের তোহফা দেওয়া হয়। কোনো বিধর্মী সজ্ঞানে স্বইচ্ছায় খুশী খোশালীতে ইসলামে দীক্ষিত হলে তাকে মিল্লাতের পক্ষ হতে উপহারে ভূষিত করা হয়। বিবাহশাদীতে আমন্ত্রিত ব্যক্তিগণ বর-কনকে নানা প্রকার উপহার প্রদান করে থাকেন। সামাজিক জীবনে যারা প্রকৃতই উপকারী, সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির রক্ষক-প্রচারক, দীনবন্ধু ও দ্বীনদরদী, তাদেরও কিছু না কিছু দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
মুসলিমদের একটা সুলভ-স্বভাব যে, তারা ইসলাম ও উম্মাতের প্রতি উচিত শ্রদ্ধা-সম্মান প্রদর্শনকারী তথা ব্যবহারিক জীবনে পক্ষপাতহীন আচরণের অধিকারী অমুসলিম ব্যক্তিবর্গকে সম্মানসূচক তোহফা প্রদান করা অত্যাবশ্যক মনে করে থাকেন। এমনিভাবে সদুদ্দেশ্য আয়োজিত সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণকারী জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিদেরও প্রাইজ-উপহার দিয়ে সম্মানিত করা হয়। সুযোগ্য ও সদগুণের অধিকারী অফিসার-ইঞ্জিনিয়ার-ডাক্তার-প্রফেসর-শিক্ষক এবং অন্যান্য বড়ো সেবকদেরও তাঁদের অবসর গ্রহণের সময় কিছু না কিছু দিয়ে বিদায় করা হয়। মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকলেরই মনের মধ্যে উপহার প্রদানের প্রীতিকর সাধ-স্বপ্ন নিহিত থাকে, যা সময় সুযোগ বুঝে পরিণতি পায়।
উপহার প্রদান: ইবাদত ও নেক আমলের সংযোগ
দ্বীন ইসলামের মতে, নিয়্যাতের বিশুদ্ধতাসহ যথাযোগ্য উপহার প্রদান করলে পরোপকার ছাড়াও তাবলীগ-ইসলাহের মতন অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ কাজেরও দুর্লভ পূণ্য অর্জন করা হয়। প্রয়োজন কেবল উপহারের বস্তু সামগ্রীর সুনির্বাচন এবং নিয়্যাত অর্থাৎ মনোবাঞ্ছা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের বিশুদ্ধতা। দ্বীন ইসলামে নেক নিয়ত ওপরই সমস্ত নেক আমলের সওয়াব নির্ভরশীল। কুরআন ও হাদীসে বারংবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মুমিন-মুসলিম যা কিছু পুণ্যময় কাজ করবে, তা সর্বত্রই যেন কেবলমাত্র এক লা শরীক আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই করা হয়। দুনিয়ার নাম লুটার জন্য নয়। লোক দেখানো নয়, সংকীর্ণ স্বার্থোদ্ধারের জন্য নয়, সরকার, প্রশাসনকে খুশী করার জন্য নয়, সমাজে সুনাম অর্জনের জন্য নয়। ইসলামে এসব কিছু নিশ্চয় হারাম। মুসলিম-জীবনের সমস্ত কর্মকান্ডের এক ও অভিন্ন লক্ষ্য হলো, নেক নিয়ত বদৌলতে ইসলাম সম্মত নেক আমলের দ্বারা একমাত্র আল্লাহ তাআলাকেই খুশী করা, রাজি করাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। এই যখন গোড়ার কথা, তখন বিভিন্ন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে বিভিন্নজনকেতোহফা-উপহার-প্রাইজ-প্রেজেনটেশান ইত্যাদি লেনদেনের ব্যাপারে আমাদের সবিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক নয় কি? নিশ্চয়ই সাবধানতা অত্যন্ত জরুরী।
উপহার নির্বাচনে সতর্কতা: ইসলামের নির্দেশনা
সাফ কথা যে, আমরা নিষ্ঠাবান মুসলিম হওয়ার সদিচ্ছা পোষণ করলে অন্যান্যদের অনুকরণে উপহার নির্বাচন কিছুতেই করতে পারি না। অন্যান্যরা ফিল্মী দুনিয়ার হিরো-হিরোইনদের, মহাপুরুষদের, বাঘ-সিংহের, মন্দির-মঠের বাঁধাই করা, সুদৃশ্য ছবি প্রিয়জনকে প্রীতি উপহার দিতে অভ্যস্ত। নাস্তিক- মুশরিক-সেকুলার লেখকদের রচনাবলী দিতে নিতে ইচ্ছুক। তাজমহল- রাজমহল, অজন্তা-ইলোরা, বৃন্দাবন, লালকেল্লা, গয়া-কাশী ইত্যাদিকেও। চিত্তাকর্ষক উপহাররূপে গণ্য করতে ওরা উৎসাহিত। দেবদেবী, যীশুখৃষ্ট, সাধুসন্ত প্রভৃতির প্রতিকৃতি দিতে নিতেও তারা বড়ো বেশী ভালোবাসে। ইসলামী জ্ঞানবিদ্যাহীন মুসলিমরাও দিল্লীর জামে মাসজিদ, আগ্রার তাজমহল, কুতুবমিনার, খাজাবাবা ও অন্যান্য বিখ্যাত পীরমুরীদের আস্তানা ও কবরের ছবি অন্যকে তোহফা দিতে এবং নিজেরও বাড়ীতে সযত্নে টাঙিয়ে রাখতে দেখা যায়। শ্রী সৌন্দর্যের জন্য কালামে পাকের আয়াত এবং দুআ টাঙিয়ে রাখা পছন্দনীয় মনে করে। মক্কা-মদীনারও বৃহদাকার ছবি টাঙিয়ে রাখে। নিঃসন্দেহে, এসবই বিকৃত ঈমান-আমলের পরিচয়। প্রকৃতপক্ষে উৎসব অনুষ্ঠানে বিবাহতে অনুদিত কুরআন-হাদীস, নাবী-জীবনী ও দ্বীনি কিতাব নেক নিয়্যাতে ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ প্রিয়জনকে প্রদান করাই সর্বোত্তম উপহার। টাকা, গয়না, থালাবাটি, পোষাক ইত্যাদি আদান-প্রদানের তুলনায় ইসলামী বিষয়বস্তুর লেনদেন সর্বোত্তম তোহফা একথা অস্বীকার করার উপায় নেই।
বিশেষত, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীকে এসবই তো উপহাররূপে দেওয়া সর্বোত্তম। উপায় থাকলে অনুকূল পরিবেশে মুসলিম- অমুসলিম-নির্বিশেষে প্রত্যেক অবসরগ্রহণকারী দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে তাঁর মাতৃভাষায় কুরআন ও নাবী জীবনী সশ্রদ্ধাচিত্তে ধরিয়ে দেওয়া আমাদের এক অপরিহার্য দায়িত্ব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ
তাআলার ঘোষণা স্মরণযোগ্য:
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
অর্থাৎ “তোমার প্রভুর পথের দিকে আহ্বান জানাও হিকমত-প্রজ্ঞার সাথে এবং মানুষদের সাথে বার্তা-বিনিময় করো সর্বোত্তম পন্থায়..." (১৬:১২৫)।
প্রশ্ন হচ্ছে যে, সুযোগ বুঝে ইসলামী বই পুস্তক তোহফারূপে প্রদান করাও হিকমতেরই নিদর্শন নয় কি?
মুসলিমরূপে নিজের নেক আমলের সঙ্গে নিজেই কেবল নিজেরই খেয়ালখুশিতে বেঁচে থাকা যথেষ্ট নয় কিছুতেই, কোনো না কোনো হিকমতের সাহায্যে প্রবৃত্তিপূজারীদের কাছে দ্বীনের বাণী তুলে ধরাও এক ফরযতুল্য দায়িত্ব - একথা কুরআনেরই কথা। প্রীতি উপহার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের মনে এ কথাটি সদা-সর্বদা জাগ্রত থাকাই শ্রেয়।
উপহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব
কেনা চায় যে, প্রিয়জনকে প্রীতি উপহার স্বরূপ প্রদত্ত জিনিসটির মেয়াদ দীর্ঘস্থায়ী হোক? মানুষ চলে যায়, কিন্তু রেখে যায় প্রীতি আর স্মৃতি। সেই প্রীতি স্মৃতির নিদর্শনটি যদি নেক নিয়্যাতের ফলে সাদকায়ে জারিয়াতে রূপান্তরিত হয়ে যায়, তবে কতোই না ভালো হয়। মৃত্যুর পরেও যে সওয়াব জারী থাকবে একথা ইসলামেরই কথা। তোহফা উপহার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা একটু যদি সতর্কতা অবলম্বন করি, তবে ইন্শাআল্লাহ দুনিয়াতে দ্বীনেরও কাজ হবে এবং আখেরাতেও প্রচুর সওয়াবের হকদার হওয়া যাবে। যেহেতু আমরা জীবন, প্রতিভা-জ্ঞান, বিষয়-সম্পত্তি সবকিছুকেই জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহর কাছে বিক্রয় করে দিয়েছি, অতএব জীবন-জীবিকার সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাদেরকে পরানুকরণ প্রবৃত্তি হতে বাঁচবার আপ্রাণ চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে। নিজেরই মতন হওয়ার জন্য একাগ্রচিত্তে আল্লাহর কালাম ও প্রিয় নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) এর জীবনাদর্শকে যথাসম্ভব মান্যতা দিয়েই হবে। আল্লাহতাআলা আমাদের ঈমানে ও আমলে বিশুদ্ধতা দান করুন,- আমীন।