টিনা এখন স্কুলে যায় 

এক সুন্দর সকালের ঘটনা। মণিপুর নামে একটি গ্রামে টিনা নামে একটি মেয়ে তার মা-বাবার সঙ্গে ছোট কুটিরে বাস করত। টিনা পড়াশোনায় খুব ভালো, কিন্তু সমাজের কুসংস্কার তার শিক্ষায় বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সে ছিল প্রতিবাদী। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পিছপা হতনা। সেই গ্রামে মেয়েদেরকে চতুর্থ শ্রেণীর অধিক পড়াশোনা করার অধিকার ছিল না। কোনো কোনো বাবা-মা তার মেয়ের বিয়েও দিয়ে দিত। 
এই ঘটনাটি হচ্ছে সকাল ছ'টার সময়। টিনা স্কুল যাবার জন্য তার স্কুল ব্যাগ গুছাচ্ছিল। 
টিনা তার মাকে: মা আমার টিফিনটা কোথায়? 
মা: একটু দাড়াও মা টিফিন নিয়ে যাচ্ছি। 
- আরে, দেরি হয়ে যাচ্ছে তো।
- এই নাও তোমার টিফিন। 
এবার টিনা তার বাবাকে: বাবা আমার স্কুলের টাকা?
টিনার বাবা (চিৎকার করে): এইতো তোকে স্কুলের ফিস দিলাম। এরই মধ্যে একমাস হয়ে গেল? তোকে পড়াতে তো আমি ভিখারী হয়ে যাব। 
- বাবা আমার বইয়ের টাকাটাও লাগবে। 
- আজকে স্কুলের ফিসটা নিয়ে যা।
- বাবা বইয়ের টাকাটা? 
- বইয়ের টাকাটা পড়ে নিস।
টিনা তার বাবার আচরণে দুঃখ পেল। সে তাড়াতাড়ি করে স্কুল চলে গেল। স্কুলে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা অনেক কম। টিনা স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল তখন কয়েকজন ছেলে তাকে নিয়ে খুব হাসাহাসি করে। একটি ছেলে বলল: কিগো দিদি বই খাতার বদলে কিছু রান্নার জন্য জ্বালানি কুরিয়ে নিচ্ছ না কেন? টিনা হল একটি প্রতিবাদী মেয়ে। টিনা সহ্য করতে না পেরে ওই খারাপ ছেলেদের মধ্যে একজনের গালে চড় মেরে দৌড়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। এক কোণে বসে টিনা কান্না শুরু করে। 
তার বাবা জিজ্ঞাসা করে: টিনা তুই কাঁদছিস কেন? 
সম্পূর্ণ ঘটনা টিনা সব কিছু ব্যাখ্যা করে বলে। এটাও বলল যে তাদের একজনকে সে চড় মেরেছি তখন তার বাবা চিৎকার করে বলল। তোর এত বড় সাহস মেয়ে হয়ে এক ছেলের গালে চড় মেরেছি। তোর আজ থেকে পড়াশোনা বন্ধ। তুই কাল থেকে স্কুল যাবি না। টিনার মা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলল: কেন সে স্কুলে যাবে না। এখন যদি মেয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি তো মেয়ে ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। টিনার বাবা বলল এটাও তো ঠিক। টিনাকে তার বাবা হাসিমুখে বলল: তুই আজ থেকে স্কুল যাবি, ভালো করে পড়াশোনা কর। তোকে ডাক্তার হতে হবে। টিনার ছোট পরিবার আনন্দে ভরে উঠলো। টিনা খুব খুশি। টিনা এখন স্কুলে যায়।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter